জপমালা ঘোষ রায়
জপমালা ঘোষ রায়ের কবিতা
চিৎসাঁতার-১
সারা রাত প্রায় জেগেই থাকি তবু রাত্রিকে যামিনী ভাবলেই প্যয়াসা জাম আউর মধুযামিনীর অনুষঙ্গ লেগে থাকা শরীর জেগে ওঠে। পাশে রাখা বোতল থেকে ঢকঢক করে জল খাই, এবং এভাবেই একটার পর একটা মধ্যযাম খুন হয় আর লোপাটলীলা চলে। অপরাধী কিছু তো ফেলেই যায় প্রমাণ, খোসার নীচে চাপা দেওয়া কিছুটা পিচ্ছিল, চোখের পাতায় কিছুটা ঘুমরেণু আর বোঁটার ঘামবিন্দু.....
চুঁয়ে চুঁয়ে নেমে আসছে ভোর...মধুঋতুবাত... মধুক্ষরণ সিন্ধু.... আমি পরমা প্রকৃতি এখন ।
আলো ফুটলেই ফুটে ওঠে স্তন।
নাদ থেকে বিস্তারে যাচ্ছে কুহুরাগ.... আনবাড়ি সাজন ঢুঁড়ছে পিউ কাঁহা.... সামাজিক বুলবুলিস্তান আমার এই পাখিয়ালি প্রাক্কাল। আমি ৪/৪ ফুট ঝুড়িবারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রকান্ড পাখনা মেলার মতো করে মুঠো করা হাত শূন্যে টানটান করে আবার ঝুঁকে গিয়ে টো টাচ করে বুঝি আমি পুরোটা আমাকেই অনায়াসে ছুঁয়ে ফেলতে পারছি। পাখনা ঝেরে আলো ছিটাই তৃষ্ণার ক্যালরি, আলোয় ধুয়ে ফেলি বিতৃষ্ণার সমস্ত টক্সিনস।
আমার সকল.... আমার সকাল.....
কষ্টিপাথরের মূর্তি বেয়ে ঘাম নেমে আসে, আরতিতে রতি এবং আর্তি মেশে। শিষ্ট পুরুষের সকল নষ্টকে ক্ষমা করি, করুণা করি।
তারপর দেখি দিগন্ত জুড়েই প্রকান্ড নগ্ন আমি কোনো পোষাকেই ঢাকা যাবে না আমাকে.....
চিৎসাঁতার-২
বাড়ি ফিরে আসছি যখন, বিবস্ত্র চাঁদ আর এলোপাথাড়ি হাওয়ায়, তালা খুলে ঢুকছি, ফোনসঙ্গীতে বাজুবন্ধ খুল খুল যায়, অনেক অনেক দূরে তখন একটা চিৎসাঁতারের ওপর প্রকট ও প্রলম্ব চাঁদ নেমে নেমে আসছে..... স্পৃষ্ট হচ্ছে পিষ্ট হচ্ছে চিৎসাঁতারুর শিশ্ন.... রু.... রুবারু....জুস্ ত জু.... রূ বা রূঢ়..... সমারূঢ়...... সমারোহ....পিংপং উঠছে নামছে.....পিক্সেল পিক্সেল বাড়ানো হচ্ছে কলঙ্কের দাহ্য.....
সচরাচর যা ঘটে থাকে তার বাইরেই সংঘটিত হচ্ছে সব, বিভাবে অনুভাবে সঞ্চারী ভাবে আমিও সঞ্চারিত হচ্ছি ওপরে....
ওপরে উঠে যাচ্ছি...
কখনো পান নি তিনি এই হামরে পড়া হাঁপুচাঁপু, স্বভাবতই তিনি বিস্মিত হচ্ছেন, যেমন বিস্ময় গুহাচিত্রের ঋতুগ্রাফিক্সে। তাঁর মেধা এই চিৎসাঁতার ও চাঁদ মেনে নিতে পারছে কি না আমি জানি না, তবে স্ফীত ও উত্থিত সুইমিংপুল থেকে খলবলানো নীল জল ঝরে ঝরে ভিজে সপসপিয়ে যাচ্ছে আঠালো কস্টিউম।
সারাজীবন বিজ্ঞান পড়ে পড়ে 'বি' জ্ঞাত এবং 'প্র' জ্ঞাত হয়েও বিপ্র বোঝেন নি মোমের গলন কোনো অগ্নিস্নান না কি ভৌত অথবা রাসায়নিক পরিবর্তন।

পাঠকের মতামতঃ